৩০ লাখ টাকা চাঁদা না দেয়ায় পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগ নেতা হানিফকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আর এ ঘটনা ঘটিয়েছেন আলোচিত চেয়ারম্যান টুটুলের নেতৃত্বে তার সাঙ্গপাঙ্গরা। এ কথা উল্লেখ করে টুটুলের বিরুদ্ধে যশোরের বাঘারপাড়া থানায় মামলা হয়েছে।
নিহতের স্ত্রী শিরিন সুলতানা এ মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলায় জামদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম টুটুলসহ ৫/৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, টুটুল দীর্ঘদিন ধরে হানিফের কাছে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। যা নিয়ে তিনি বিভিন্ন সময় হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলেন। ওইদিন সকালে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাকে ডেকে নিয়ে যওয়া হয় বাঘারপাড়ার ভাঙ্গুড়া গ্রামের একটি ইট ভাটায়। পরে সেখানে তাকে টুটুলের লাইসেন্সকৃত পিস্তল দিয়ে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়।
এছাড়া, শিরিন সুলতানা শুক্রবার লাশ নিয়ে যখন যশোর জেনারলে হাসপাতালে এসেছিলেন তখন সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার দিন হানিফ রোজা ছিলেন। কামরুল ইসলাম টুটুল তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে ইফতার করিয়েছিলেন। এরপর প্রচুর মদ পান করানোর পর তাকে গুলি করা হয়েছে। শিরিন আরও দাবি করেন, টুটুল এই হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা।
এর আগে মদ্যপ অবস্থায় হানিফকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এ মামলার প্রধান আসামি টুটুল বুধবার রাত ১২ টার পর যশোর জেনারেল হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে যান। এসময় তিনি একেক সময় একে তথ্য দিলেও এক পর্যায় তার গুলি করার বিষয়টি পরিবারকে খুলে বলেন। ঢাকাতে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে বাঘারপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল আলিম জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে মামলার পর তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা ভিটাবল্যা ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই রোকনুজ্জামান কাজ করছেন। মামলার তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য, নিহত হানিফ এক সময় মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী ছিলেন। এক পর্যায় যুবলীগ নেতা ফন্টু চাকলাদারের বন্ধু হওয়ায় তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। রাজনীতির ফাঁকে বিভিন্ন ব্যবসা করতেন। এক পর্যায় তিনি প্রথম স্ত্রীকে ছেড়ে আরেকটি বিয়ে করেন। ওই স্ত্রীর কাছে তিনি থাকতেন। ওই স্ত্রী তার বিরুদ্ধে আদালতে পতারনার মামলা করেন। সেই মামলা এখনো বিচারাধীন। এছাড়া হানিফের আওয়ামী লীগের আরও বেশ কয়েকজন নেতা ও ব্যবসায়ীদের সাথে দহরম মহরম সম্পর্ক গড়ে উঠে। ওইসব ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও মোটা অংকের টাকা নেন হানিফ। গত বছরে তার বিরুদ্ধে ২৭ লাখ টাকার প্রতারনার মামলা হয়। এছাড়াও তার বিরুদ্বে একাধিক মামলা রয়েছে। বলে থানা সূত্রে জানা যায়।
খুলনা গেজেট/এএজে